Friday 13 April 2018

HarKiDun - হর কি দুন





এবার ট্রেকিংএর জন্য পশ্চিম হিমালয় পর্বতমালার হার কি দুন নামক একটি সুন্দর উপত্যকা বেছে নিয়েছি এটি একটি অতিপ্রাচীন পথ, যেখান থেকে স্বর্গরোহিনী ,, দেখতে পারেন এবং পুরান অনুযায়ী মহাভারতে যুধিষ্ঠির এবং ধর্মা এই পথ ধরেই স্বর্গের উদ্দেশ্যে এগিয়ে গিয়েছিলেন

অক্টোবরের ২০ তারিখ কলকাতা থেকে সকালের বিমান ধরে দিল্লী, তারপর ওখান থেকে জনশতাব্দী  ধরে পৌঁছে গেলাম দেরাদুন রাতটা স্টেশনের কাছেই একটা হোটেলে কাটিয়ে নিলাম পরের দিন সকাল :৩০ টার মধ্যে সবাই স্টেশনের পাশে এসে জড়ো হলাম গাড়ি আগে থেকেই ঠিক করে রাখা ছিল আমাদের আজ আমরা যাবো দেরাদুন থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে সাংক্রি নামে একটি গ্রাম মুশৌরি, নাইনবাঘ, নৌগাওঁ, পুরোলা, জাৰ্মালা হয়ে সাংক্রি পৌঁছতে লেগে গেলো ঘন্টা সাংক্রি (উচ্চতা ,৩৯৭ ফুট) গোবিন্দ ন্যাশনাল পার্কে পাহাড়ের কোলে একটি ছোট কিন্তু সুন্দর গ্রাম, যার মধ্যে ২৫০ ঘরবাড়ি রয়েছে আমাদের পুরো ট্রেকটি গোবিন্দ ন্যাশনাল পার্কের বিভিন্ন পাহাড় এর ভিতর দিয়ে  কেদারকন্ঠা, বালি পাস, বোরসু  পাস, হার কি দুন ট্রেকিংএর বেসক্যাম্প এখানেই জিপসি চাইল্ড হোস্টেল নামে একটি ছোট হোটেল তাড়াতাড়ি ডিনার সেরে ঘুমিয়ে পড়লাম


একটি চার-চাকার ড্রাইভ রাস্তা যা সাংক্রিকে তালুকার (১২ কিলোমিটার) সাথে সংযুক্ত করে এটি একটি ধসপ্রবণ পথ, এবং প্রায়শই বর্ষার সময় বন্ধ হয় কিন্তু রাস্তাতে সুন্দর ফুল, বন্য গোলাপ, আখরোট, কাজু  এবং সিডার গাছ দেখতে পাওয়া যায় এই রাস্তাতে সেরম কোনো চড়াই উতরাই নেই, শুধু - তা পর্বতমালার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তালুকাতে GMVN গেস্ট হাউস কিছু ধাবা আছে যারা সাংক্রি থেকেই ট্রেকিং শুরু করে তাদের জন্য এখান থাকার সুব্যবস্থা আছে আমরা তালুকা পর্যন্ত গাড়ি নিয়ে চলে আসলাম এক ঘন্টার মধ্যেই আমরা তালুকা পৌঁছে গেলাম এখন থেকেই আমাদের ট্রেকিং শুরু হলো পুয়ানি গাঢ়াত এর উদ্দেশ্যে(১৩ কিলোমিটার)


তালুকা থেকে ট্রেকিং শুরু হলো সুপিন নদীর পাশ ধরে পাহাড়ি পাখির ডাক শুনতে শুনতে সবুজ জঙ্গলের ভিতর দিয়ে আমরা এগিয়ে চললাম প্রাকৃতিক শোভা উপভোগ করতে করতে কখনো চড়াই, কখনো উতরাই রাস্তা এগিয়ে চলেছে রাস্তায় অনেকগুলো সুপিন নদীর উপনদীও আমাদের পার করতে হলো এই জায়গা গুলো থেকে জলের বোতল ভোরে নিলাম প্রায় . ঘন্টা হাঁটার পর আমরা একটি ক্যাম্পিং গ্রাউন্ডে পৌঁছলাম পিঠের রুকস্যাক নামিয়ে এখানে কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে আমাদের এগিয়ে চললাম এখন থেকেই উপত্যকায় ভেতরের অংশ শুরু হয় ধস পড়ার জন্য সামনের কিছুটা রাস্তা প্রায় নেই বললেই চলে আমরা নিচের দিকে সুপিন নদীর তীরে নেমে আসলাম ওখান দিয়ে একটা বিকল্প রাস্তা বানানো আছে দেখলাম মাঝে মাঝে পাখির ডাক আর পায়ের আওয়াজ ছাড়া, জঙ্গলে আর কোনো আওয়াজই নেই একটি উপনদী অতিক্রম করে আরো একটি খাড়াই পার করে আমরা দেখলাম নদীর ওপারে একটি ছোট্ট গ্রাম ৩০-৪০ টা ঘর নিয়ে গ্রামটির নাম ডাটমির আস্তে আস্তে আরও চড়াই শুরু হলো,আমরা সুপিন নদীকে নিচে রেখে উপরের দিকে উঠে আসলাম প্রায় ঘন্টা হাঁটার পর বাম পাশে আরও একটি গ্রাম চোখে পড়লো এই গ্রামটির নাম গঙ্গার| সামনে একটা বড় পাথরের নিচে একটা ছোট ধাবাও চোখে পড়লো ধাবার পিছনে একটি ছোট কুটির, যেখানে স্থানীয়রা জলের গতি ব্যবহার করে একটি যান্ত্রিক টারবাইন চালানোর বানিয়েছেন, যা দিয়ে গম ভাঙার কাজ হয়ে যায় আর ঘন্টা হাঁটার পর আমরা পৌঁছে গেলাম পুয়ানি গাঢ়াত যারা দু দিনেই হার কি দুন পৌঁছতে চায়, তারা হয় ওসলা নইলে সীমা নামক জায়গাতে থাকা পছন্দ করে ওসলা এখান থেকে আরো কিলোমিটার উপরে, সুপিন নদীর ওপারে আর সীমা নামক গ্রামটি যেতে গেলে এই রাস্তা দিয়েই সোজা আরও ৯০ মিনিট হেটে যেতে হয়, ওখানেও GMVN গেস্ট হাউস আছে প্রায় ঘন্টা ট্রেক করে আমরা ইতিমধ্যে ক্লান্ত, তাই আজ পুয়ানি গাড়াতেই (উচ্চতা ৮২৮০ ফুট) ক্যাম্প করে থাকবো



আজ অক্টোবরের ২২ তারিখ, আমাদের আজকের দিনের ট্রেক শুরু হলো ওসলা যাবার পথ দিয়ে একটি কাঠের ব্রিজ দিয়ে আমরা সুপিন নদীর ওপারে গেলাম, এবারের রাস্তাটা বেশ কিছুটা খাড়াই ঘন্টা চলার পর আমরা পৌঁছে গেলাম ওসলা মহাভারতের পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী শতাব্দী প্রাচীন এই গ্রামটিতে দুর্যোধন এসে থেকেছিলেন এবং এখানকার লোকজন দুর্যোধনের জন্য একটি মন্দিরও প্রতিষ্ঠা করেছে, যেখানে এখনো দুর্যোধন এর পুজো হয় প্রায় ৬০০ বাসিন্দাদের নিয়ে গ্রামে মোট ২৫০ টি বাড়ি রয়েছে আমি গ্রামের বাচ্চাদের সাথে অনেক সময় কাটিয়েছি, সবসময়ে তাদের মুখে একটা মিষ্টি হাসি থাকতো সীমিত সম্পদ নিয়ে অধিকাংশ গ্রামগুলোর সরল জীবন আমাদের শেখায়, আপনার জীবনে যা আছে তার সাথে সন্তুষ্ট থাকার ওসলা থেকে রাস্তাটি বেশ খাড়াই হলেও পর্যায়ক্রমে সমতল আধা ঘণ্টার মধ্যে, আমাদের দুইটি স্ট্রিমকে অতিক্রম করতে হলো, যার মধ্যে দ্বিতীয়টির একটি কাঠের ব্রিজও  আছে এখান থেকে সামনে বেশ কয়েকটি পরিষ্কার জমি দেখা যাচ্ছিলো এখানে কিছু জমিতে চাষবাসও হতে দেখা যাচ্ছিলো আবার কোথাও পশুচারণভূমি সমতল রাস্তাটি অতিক্রম করতে ৯০ মিনিট লেগে গেলো মাঝে সুপিন যেদিন উপর দিয়ে একটা কাঠের ব্রিজ দেখা গেলো আমাদের গাইড বন্ধু বললেন ওই রাস্তা টা চলে গেছে রুইনসারা তাল, বালি পাস এর দিকে আমরা সোজা এগিয়ে চললাম উপত্যাকা বরাবর এখানের প্রাকৃতিক দৃশ্য অপূর্ব, নিচে সুপিন এবং রুইন্সের নদীর সঙ্গমস্থল, উপরে ধৌলাধার তুষারাবৃত পর্বতমালা এবারের রাস্তা ভীষণ খাড়াই, ডান দিকে দেখা যাচ্ছে  তুষারাবৃত কালাঙ্গ (ব্ল্যাক পিক) বান্দরপুচ্ছ (মানকি টেইল) পর্বত খাড়াইয়ের উপরেই আজ আজকের ক্যাম্পসাইট কালকাটিয়াধার (উচ্চতা ,৯৫৬ ফুট) এখান থেকে আমার বেশ কিছু গোল্ডেন ঈগল এবং বিশাল হিমালয়ান গ্রিফিন্স দেখতে পেলাম ৩০ মিনিটের মধ্যে আমরা আমাদের ক্যাম্প সাইট পৌঁছে গেলামসূর্যাস্তের পর কালকাটিয়াধারে যে তাপমাত্রা যে অনেকটাই কমে গেছে বুজতে পারলামতুষারপাত না হলেও গুঁড়ো গুঁড়ো বরফ ঝরছিল, তাই আমরা টেন্টের ভিতরে রাতে খাবারের প্রস্তুতি শুরু করে দিলামপরের দিনের গন্তব্যস্থল হার কি দুন


চড়াই দিয়েই আজ আমাদের ট্রেকিং শুরু আজ আমরা প্রথমবার ৩০০০মিটার উচ্চতাএ উঠলাম এরপরেই ৩০ মিনিটের উতরাই, যার শেষে আমাদের একটা ছোট জলপ্রপাত পার করতে হবে এখান থেকে আর কিলোমিটার ট্রেক করলেই আমরা আমাদের গন্তব্যস্থল পৌঁছে যাবো সামনের পাহাড়ের বাঁক পার করেই সামনে দেখা মিল্লো হার কি দুন পিক এবং টার ঠিক পিছনে হাটা পিক এরপর ট্রেইল আস্তে আস্তে নিচের দিকে নেমে চললো দুই দিকে রোজোডেনড্রন এবং পাইন গাছ দেখতে দেখতে এগিয়ে চললাম পাহাড়ের যেই অংশে এখনো রোদ পৌছায়েনি সেখানে এখনো বরফের একটা পাতলা স্তর  পরে আছে রাস্তায় আরো কয়েকটি জলপ্রবাহ পার করতে হলো, এবং হার কি দুন পিক আস্তে আস্তে সামনে আস্তে লাগলো দেবদারূ এবং পাইন কাঠের গাছের গন্ধে যেকোনো প্রকৃতিপ্রেমিই মুগ্ধ হয়ে যাবে শেষ ৩০মিনিট একটি ফরেস্ট এর ভিতর দিয়ে আস্তে আস্তে উপরে উঠতে থাকলাম হার কি দুন পৌঁছে বেশ কিছুক্ষন বাকরুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম সামনে বয়ে চলেছে কর্মনাশা নদী, সামনে দাঁড়িয়ে আছে হার কি দুন পিক টার ঠিক পিছনে হাটা পিক, নদীর ওপারে গাছের পেছন দিয়ে উঁকি মারছে বরফে ঢাকা স্বর্গরোহিনী দু'চোখ ভোরে দেখতে লাগলাম প্রকৃতির এই অপরূপ দৃশ্য এর জন্য সব কষ্টই স্বার্থক হার কি দুন (উচ্চতা ১১,৭৬৮ ফুট) থেকে একটি রাস্তা চলে গেছে বামদিকে সোজা মানিন্দা তালের দিকে এবং ডান দিকের রাস্তাটি চলে গেছে জুনদার হিমবাহ নিঃসন্দেহে হার কি দুন পশ্চিমাঞ্চলীয় হিমালয়ের সবচেয়ে সুন্দর উপত্যকা


আপনি যখনই হার কি দুন পৌঁছবেন, কখনোই এই উপত্যকার অপরূপ সৌন্দর্য ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করবে না আমরাও কারমনসা নদীর পশে বসেই প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে থাকলাম যদি ফটোগ্রাফির শখ থাকে তাহলে এই ট্রেক আপনার জন্য আদর্শ আগেরদিনের মতন আজও সূর্যাস্তের সময়ে গুঁড়ো গুঁড়ো বরফ ঝরতে শুরু করলো আদা চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে সূর্যাস্তের দৃশ্য ভাষায় বর্ণনা করা কঠিন সূর্যাস্তের পর তাপমাত্রা নিঃসন্দেহে মাইনাসে চলে গিয়েছিলো সবাই জড়ো হলাম ডাইনিং টেন্টে, সেখানে চললো গানের লড়াই রাত ৮টা পর্যন্ত ডিনার সেরে বাইরের দৃশ্য অতুলনীয় কোটি কোটি তারার আলোতে আমাদের হলুদ টেন্টও জ্বলজ্বল করছিলো খালি চোখে আকাশগঙ্গা দেখার অভিজ্ঞতাও অতুলনীয় আর দেরি না করে আমরা টেন্টে গিয়ে আমরা স্লিপিং ব্যাগের ভিতর ঢুকে পড়লাম কাল আমরা সারাদিন হার কি দুন এই কাটাবো


পরের দিন সূর্যোদয় দেখার জন্য তাড়াতাড়ি উঠে পড়েছিলাম টেন্ট খোলার সময়ে সারারাতের জমা বরফের গুঁড়ো সামনে পড়লো তখনও ভোরের আলো ফোটেনি, কিন্তু বুঝতে পারছিলাম যে পুরো উপত্যকাতেই বরফের একটা পাতলা আস্তরণ পরে আছে আমাদের জন্য রাখা জলের বালতিটি পুরোটাই বরফে রূপান্তরিত হয়ে গেছে আস্তে আস্তে নদীর ওপারে পাহাড়ের উঁচু অংশটাএ উঠে সূর্যোদয়ের অপেক্ষা করলাম আস্তে আস্তে আকাশ ফর্সা হতে শুরু করলো, অন্ধকার কেটে লাল আভার মতন সূর্যের আলো বেরিয়ে এলো স্বর্গরোহিনীর ঠিক পেছন থেকে নিচে নেমে ব্রেকফাস্ট খেয়ে তৈরী হয়ে নিলাম উপত্যকাটা ঘুরে দেখার জন্য আমাদের কাছে দুটো বিকল্প আছে, হয় আমরা যাবো স্বর্গরোহিনীর দিকে, যেখানে জুনদার হিমবাহ আছে, নয়তো মানিন্দা তাল, যেই রাস্তাটা সোজা হিমাচলের চিটকুল পর্যন্ত চলে গেছে আমাদের গাইড বন্ধুর মতে, হিমবাহ শেষ ১০বছরে -৮কিলোমিটার পেছনে চলে গেছে তাই হিমবাহর কাছে পর্যন্ত যাওয়া এখন আর সম্ভব না, দূর থেকেই দেখতে হবে, আবার মানিন্দা তালের রাস্তাটা কিন্তু খাড়াই আমরা সবাই ঠিক করলাম, মানিন্দা তাল যাবো ক্যাম্পসাইট থেকে বাম দিকের চড়াই রাস্তাটা আমরা নিলাম হাটা পিকের উত্তরদিকে রাস্তার দুইদিকে সুন্দর আলপাইন ফুলের বাহার অপরূপ .৫ঘন্টার মধ্যেই আমরা মানিন্দা তাল পৌঁছে গেলাম, এখানে প্রচুর পরিমাণে ব্রহ্ম কমল দেখতে পাওয়া যায়, এটি একটি বিরল ক্যাকটাস যা কেবলমাত্র রাতে প্রস্ফুটিত হয় প্রায় ১ঘন্টা কাটিয়ে আমরা ক্যাম্পসাইটএ ফিরে আসলাম, যেখানে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলো সুস্বাদু লাঞ্চ সূর্যের আলো ভীষণ প্রখর হবার জন্য টেন্টের ভিতর বেশ গরমই লাগছিলো পরের দুদিনে আমাদের প্রায় ২৭কিলোমিটার পার করে সাংক্রি পৌঁছতে হবে, তাই আজ একটু বিশ্রাম নিয়ে নিলাম সূর্যাস্তের আগে টেন্ট থেকে বেরিয়ে শেষ বারের মতন প্রকৃতির এই অপরূপ সৃষ্টিকে ক্যামেরা বন্দি করে নিলাম তাড়াতাড়ি ডিনার করে আজ শুরে পড়লাম, কাল ১৫কিলোমিটার ট্রেক করে পুয়ানি গাড়াতে পৌঁছতে হবে


এবার ফেরার পালা, সকালে উঠে সবাই টেন্ট গুছিয়ে নিলাম রুকস্যাক পিঠে তুলে হার কি দুনকে শেষবারের মতন বিদায় জানিয়ে আমরা আমাদের যাত্রা শুরু করলাম আজ যেহেতু অনেকটা রাস্তা আমাদের পার করতে হবে, প্রথম থেকেই একটু তাড়াতাড়ি পা চালাতে হলো প্রায় . ঘন্টার মধ্যেই আমরা কালকাটিয়াধারের ক্যাম্পসাইট পার করে ফেললাম আমাদের মধ্যে অনেকেই পরিশ্রান্ত হয়ে যাওয়ায় আমাদের অনেকবার বিশ্রাম নিতে হয়েছিল বিকেল ২টো বেজে গিয়েছিলো, কিন্তু আমরা তখনও ওসলা পৌঁছতে পারিনি, তাই আমাদের গাইড বন্ধু অন্য একটা নতুন রাস্তা দিয়ে যাবার প্ল্যান করলো ওসলা পৌঁছনোর কিলোমিটার আগেই একটা রাস্তা সোজা নিচে সুপিন নদীর উপর একটা পাকা সেতুতে নিয়ে যায় রাস্তাটা বিপজ্জনক হলেও, নিচে নামার পর আর মাত্র ১ঘন্টার মধ্যেই আমরা পুয়ানি গাড়াতে পৌঁছে যাই পরেরদিনও আমরা একটু তাড়াতাড়ি যাত্রা শুরু করে দিলাম, যত তাড়াতাড়ি সাংক্রি পৌঁছতে পারবো, ততই ভালো এইদিনও আমাদের ১১কিলোমিটার ট্রেক করতে হলেও, রাস্তা অপেক্ষাকৃত অনেক সোজা প্রায় দুপুর .৩০টার মধ্যেই আমরা তালুকা পৌঁছে গেলাম কোনো হিমালয়ান ট্রেকের গল্প হবে, কিন্তু সাথে কোনো কুকুরের কথা উল্লেখ হবেনা তা হয় না কালু নামে একটি বিশালাকৃতি কুকুর হার কি দুন যাবার সময়ে, ওসলা থেকেই আমাদের সাথে ছিল শেষ ৪দিন ধরে, সেও যেন আমাদের সঙ্গী হয়ে উঠেছে তালুকা থেকে সাংক্রি যাবার গাড়িও ততক্ষনে চলে এসেছে, কালু বিদায় জানিয়ে আমরা গাড়ি উঠে পড়লাম সে হয়তো পরের দিন অন্য কোনো এক ট্রেকিং গ্রুপের সাথে আবার ফিরে যাবে


সাংক্রিতে সবাই মিলে নিজেরা নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম খুব সুন্দর কাটলো শেষ ৬দিন পরের দিন সকাল ৮টা নাগাদ গাড়ি নিয়ে দেরাদুন চলে আসলাম দেরাদুন থেকে রাতে নন্দাদেবী এক্সপ্রেসে ধরে দিল্লি, তারপরের দিন দিল্লি থেকে বিমান ধরে কলকাতা

No comments:

Post a Comment